১০ই জানুয়ারী বিকালে বিএনপির সন্ত্রাসীরা প্রভাতের পাতার ঝিনাইদহের প্রধান সংবাদদাতা আল মামুন ও তার পরিবারের ওপর নির্মম হামলা চালায়। এ সময় তার বাবা ও পরিবারের আরো ৫ সদস্য হামলার শিকার হন।
আল মামুনের চাচাতো ভাই তোফাজ্জেল হোসেন বেড়বাড়িয়া গ্রামের মসজীদের ইমাম, পিতা মৃত মাহাতাব মোল্লা, আসরের নামাজ পড়ানোর উদ্দেশ্যে বের হলে যাদবপুর এলাকার সন্ত্রাসীরা তার পথরোধ করে।
জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে তারা তাকে বেধড়ক মারধর করে। এতে তিনি মাথা, হাত এবং পায়ে গুরুতর আঘাত পান। এরপর তোফাজ্জেলের বাড়ীতে যেয়ে তার স্ত্রী মোসা: রোজিনার মাথায় আঘাত করে। একই সাথে তার বড় ভাই তাজুল ইসলাম (তাইজাল) কে গুরুতর আঘাতে করে। তার বাম হাত ভেংগে গিয়েছে এবং সমস্ত শরীরে রড়, বাশ ও অন্যান্য হাতিয়ার দ্বারা আঘাত করেছে সন্ত্রাসীরা।
এরপর সন্ত্রাসীরা শরিফুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালায়। সেখানে মো. মোস্তফা ও মো. ইসরাফিলকে আক্রমণ করে এবং তাদের বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার তাড়া করে। মোস্তফা মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত পান, তার মাথায় তিনটি সেলাই লেগেছে।
তোফাজ্জেল হসেনের উপর হামলার কথা শুনে তাকে দেখতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন আল মামুন ও তার বাবা, সাথে সাথে তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় দুরবৃতত্তরা।
সন্ত্রাসীরা তোয়াক্কাল হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়। তোয়াক্কাল হোসেন কে রামদা দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় এবং রড দিয়ে হাত ও পায়ে মারধর করা হয়। তাঁর ডান হাত তিন জায়গায় ভেঙে গেছে এবং বাম হাতের একটি আঙুল কেটে গেছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে তাকে যশোর হাসপাতালে এবং সেখান থেকে ঢাকায় স্থানান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে।
সাংবাদিক আল মামুন তার বাবাকে রক্ষা করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তার বাম হাতে লোহার রড দ্বারা আঘাত করে হাত ভেঙে দেয়।
হামলার পর ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে ১০০ থেকে ১৫০ জন সন্ত্রাসী, ভুক্তভোগীরা চিকিৎসার উদ্দেশ্যে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য যানবাহন নিয়ে আসলে সেই যানবাহনের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
এই বর্বর হামলার পর ভুক্তভোগী পরিবার আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে। মামলার প্রাথমিক কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে।
সন্ত্রাসীদের তালিকা:
হামলার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের মধ্যে রয়েছেন—
১. হবি (৩৬), পিতা: মৃত এরশাদ মেম্বার, সাং: যাদবপুর।
২. সবুজ (৩৩), পিতা: মৃত ইসরাইল হোসেন (মন্টু), সাং: যাদবপুর।
৩. স্বপন (৩৭), পিতা: মৃত ইসরাইল হোসেন (মন্টু), সাং: যাদবপুর।
৪. জিয়া (৩৫), পিতা: মৃত ভোলা, সাং: যাদবপুর।
৫. ঝন্টু (৩৪), পিতা: তাইজাল, সাং: যাদবপুর।
৬. ইয়াকুব হোসেন (সাগর) (২৮), পিতা: রমজান (নুজদেরে), সাং: যাদবপুর।
৭. শহিদুল (৪২), উমর মোল্লার জামাই (সরোয়ারের বোনাই)।
৮. বাবলু (৫৬), পিতা: মৃত আফসার আলী, সাং: যাদবপুর।
৯. তহিদুল (৩৮), পিতা: মৃত আফসার আলী, সাং: যাদবপুর।
১০. নুর ইসলাম (৪১), পিতা: মৃত আফসার আলী, সাং: যাদবপুর।
১১. আশাদুল (৩৮), পিতা: মৃত এরশাদ মেম্বার, সাং: যাদবপুর।
১২. রিজাউল (৫৩), পিতা: মৃত আ: জলিল, সাং: যাদবপুর।
১৩. হাসান (২৯), পিতা: রিজাউল, সাং: যাদবপুর।
১৪. তাইজাল (৫৪), পিতা: মৃত এরশাদ মেম্বার, সাং: যাদবপুর।
১৫. আরিফুল (৩১), পিতা: মৃত কাদের বিশ্বাস, সাং: যাদবপুর।
১৬. শাহিন (৩৮), পিতা: মৃত মাজেদ বিশ্বাস, সাং: যাদবপুর।
সকল আহতদের মধ্যে তোয়াক্কাল হোসেন এবং মোস্তফার অবস্থা গুরুতর। তোয়াক্কাল হোসেনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করার প্রক্রিয়া চলছে।