নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলায় পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম (৪৮) হত্যার ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের আলাদা দুটি স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণা কার্যালয়ের সদস্যরা। পরে মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া পিবিআই ময়মনসিংহ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার মো. রকিবুল আক্তার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সাজিবুল ইসলাম ওরফে অপূর্ব (২৮) এবং মো. বাকী বিল্লাহ (৩০)। অভিযানের সময় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত লাল রঙের একটি পালসার মোটরসাইকেলও জব্দ করা হয়েছে।
পিবিআই জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
নিহত শফিকুল ইসলাম দুর্গাপুরের চণ্ডীগড় ইউনিয়নের নয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। তিনি জামালপুর পুলিশ লাইনসের বেতার বিভাগে এসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জানা গেছে, শফিকুল ইসলাম ছুটিতে গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) বাড়ি আসেন। পরের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর পৌর শহরের বাগিচাপাড়া এলাকার বাসা থেকে বের হন। সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে পানমহাল রোড এলাকায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার ওপর হামলা চালায়।
স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, সন্ধ্যায় শফিকুল ইসলাম পানমহাল সড়ক দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় তিন থেকে চারজন যুবক আকস্মিকভাবে রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, দুর্বৃত্তরা শফিকুলকে কোপাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে অন্ধকার থাকার কারণে কারও পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাত ছয়জনকে আসামি করে দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। রোববার দুপুরে গ্রেপ্তারকৃতদের নেত্রকোণা জেলা আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।শফিকুলের বাবা রফিকুল ইসলাম বলেন, “কারা, কেন আমার ছেলেকে হত্যা করল, আমি বুঝতে পারছি না। তবে আমি চাই দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হোক।”
পিবিআই জানিয়েছে, এ হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে। তদন্তের স্বার্থে সময়মতো বিস্তারিত জানানো হবে।