বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নেতাদের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম মঙ্গলবার রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে এক অনুষ্ঠানে বলেন,
“যতদিন না শেখ হাসিনাকে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হচ্ছে, ততদিন কেউ যেন ভুলক্রমেও নির্বাচনের কথা না বলে।”
এই বক্তব্যের পর রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়।
ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা?
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. ইউনূস বলেন, ডিসেম্বর ২০২৫ বা মার্চ ২০২৬-এ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে।
মঙ্গলবার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন,
“সরকার প্রধান যেখানে একটি টাইম ফ্রেম ঘোষণা করেছেন, আমরা ডিসেম্বর ধরে নিয়েই প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
নির্বাচনের আগে বিচার দাবি এনসিপির
জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলম দাবি করেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদেই শেখ হাসিনার বিচার সম্পন্ন করতে হবে।
তিনি বলেন,
“শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য শেখ হাসিনা গণহত্যা চালিয়েছে, নৃশংসতা চালিয়েছে, হাজারের ওপর মানুষের প্রাণ নিয়েছে। অন্তত সেই একটা মানুষের বিচার যেন নির্বাচনের আগেই নিশ্চিত করা যায়।”
তিনি আরও বলেন,
“আমাদের দাবি নির্বাচন নয়, আগে বিচার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই খুনি হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
আইন বিশেষজ্ঞদের মতামত
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বা ফৌজদারি বিচার প্রক্রিয়া একটি দীর্ঘ সময়সাপেক্ষ বিষয়। তাই আগামী ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই বিচার সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রতিক্রিয়া
এনসিপির বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ এটিকে রাজনৈতিক চাপ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে বলছেন, এটি একটি গুরুতর রাজনৈতিক সংকেত যা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।
এখন প্রশ্ন উঠেছে— তবে কি শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত এনসিপি নির্বাচন মেনে নেবে না?