বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্স, টেসলা ও এক্স-এর মালিক ইলন মাস্ক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এক বিস্তৃত আলোচনা করেছেন। আলোচনার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা চালুর সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ পারস্পরিক সহযোগিতার দিকগুলো।
এই আলোচনায় ড. ইউনূস ও ইলন মাস্ক বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, গ্রামীণ ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের জন্য স্টারলিংকের ইন্টারনেট সংযোগের পরিবর্তনশীল প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন। তারা উল্লেখ করেন, উচ্চগতির ও স্বল্পমূল্যের ইন্টারনেট সংযোগ দেশের ডিজিটাল বৈষম্য কমাতে সাহায্য করবে এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশে স্টারলিংকের সংযোগ যুক্ত হলে কোটি কোটি মানুষ নতুন সুযোগ পাবে এবং দেশটি বৈশ্বিক ডিজিটাল অর্থনীতির সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত হবে।
তিনি আরও বলেন, “স্টারলিংক হবে গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণফোনের পথচলার এক সম্প্রসারণ, যা গ্রামাঞ্চলের নারী ও যুবসমাজকে বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত করবে। তারা হবে গ্লোবাল নারী ও শিশু, এবং বিশ্ব উদ্যোক্তা।”
অন্যদিকে, ইলন মাস্ক গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণ মডেলের প্রশংসা করেন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে এর বৈশ্বিক প্রভাব স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “আমি বহু বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক ও গ্রামীণ ভিলেজ ফোনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানি এবং বিশ্বাস করি, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশে আরও উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্ভব হবে।”
ড. ইউনূস বাংলাদেশে স্টারলিংক পরিষেবার সম্ভাব্য উদ্বোধনের জন্য ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান, যার জবাবে মাস্ক ইতিবাচক সাড়া দেন।
“আমি এই সফরের অপেক্ষায় আছি,” বলেন মাস্ক।
এই উদ্যোগ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি ও উদ্ভাবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
আলোচনার শেষে উভয় পক্ষ দ্রুততার সঙ্গে প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে একমত হন এবং পরবর্তী পদক্ষেপগুলো নির্ধারণে প্রতিনিধি দলকে দায়িত্ব দেন।
সভায় বাংলাদেশ পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ড. খলিলুর রহমান, রোহিঙ্গা সংকট ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুর হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং লামিয়া মোরশেদ, এসডিজি-র প্রধান সমন্বয়কারী। অন্যদিকে, স্পেসএক্স পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন লরেন ড্রেয়ার, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং রিচার্ড গ্রিফিথস, গ্লোবাল এনগেজমেন্ট উপদেষ্টা