লস অ্যাঞ্জেলেসের পাহাড় ও উপত্যকায় ভয়াবহ দাবানল চলছে, যা ধ্বংসস্তূপে রূপান্তরিত করেছে বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও মানুষের জীবিকা। এটি ক্যালিফোর্নিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল আগুনের ঘটনায় পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দাবানলের কারণে ১,৫০,০০০-এর বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এবং আরও ১,৬৬,০০০ জনকে সরে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৩৫,০০০ একরের বেশি জমি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এলএ কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনারের তথ্যমতে, দাবানলে এখন পর্যন্ত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
ইটন ফায়ার, যা প্রায় ১৪,০০০ একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় এবং মারাত্মক। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে কর্মকর্তারা জানান, বাতাসের পরিস্থিতি অনুকূল থাকায় দাবানল সপ্তাহান্তে তেমন ছড়াবে না। তবে আগামী সপ্তাহে আরেকটি প্রবল বাতাসের পূর্বাভাস রয়েছে।
জেপি মরগানের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, দাবানলের কারণে বীমাকৃত ক্ষতি হতে পারে ২০ বিলিয়ন ডলার এবং মোট অর্থনৈতিক ক্ষতি ৫০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। এটি ২০১৮ সালের ক্যাম্প ফায়ারের চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক, যা ১০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি করেছিল।
লস অ্যাঞ্জেলেসের আকাশে ঘন ধোঁয়া এবং ধূসর মেঘের কারণে শহরটি যেন এক ভুতুড়ে রূপ ধারণ করেছে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি নাথান হকম্যান বলেন, “১৯৯০-এর দশকের প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর এ ধরনের পরিস্থিতি আমি আর দেখিনি।”
ভুল জরুরি বার্তা পাঠানোর কারণে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টির অফিস অফ এমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টের পরিচালক কেভিন ম্যাকগোয়ান ভুল বার্তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং সমস্যাটি দ্রুত সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
এদিকে, ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FAA) সাধারণ জনগণকে ফায়ারফাইটিং এলাকায় ড্রোন উড়ানো থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করেছে। ড্রোনের ধাক্কায় একটি দমকল বিমানের ক্ষতি হওয়ায় এটি গ্রাউন্ড করা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রায় ৯৫,০০০ বিদ্যুৎ গ্রাহক এখনো বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় রয়েছে।
ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারলিংক ঘোষণা করেছে যে লস অ্যাঞ্জেলেসের মানুষ তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে প্রিয়জনের সঙ্গে যোগাযোগ, ৯১১ কল এবং জরুরি বার্তা গ্রহণ করতে পারবে।
এই দাবানল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসন এবং ফায়ারফাইটাররা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।