ইলন মাস্কের সাফ বক্তব্য: ‘টিকটক কেনার কোনো পরিকল্পনা নেই’
যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ হওয়ার শঙ্কা কাটলেও ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটকের মালিকানা পরিবর্তন নিয়ে গুঞ্জন থামছে না। সম্প্রতি ধারণা করা হচ্ছিল, টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক টিকটক কিনতে পারেন। তবে মাস্ক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এমন কোনো পরিকল্পনা তাঁর নেই।
‘টিকটক কেনার কোনো আগ্রহ নেই’ – মাস্ক
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি জার্মান মিডিয়া কোম্পানি অ্যাক্সেল স্প্রিঙ্গার এসই-এর অংশ দ্য ওয়েল্ট গ্রুপের আয়োজিত একটি সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন ইলন মাস্ক। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি টিকটকের জন্য কোনো বিড করিনি।’
ট্রাম্পের পরামর্শ, মাস্কের সোজাসাপ্টা জবাব
মাস্কের এই মন্তব্য এমন এক সময় এসেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘যদি মাস্ক চান, তাহলে তিনি টিকটক কিনতে পারেন।’
তবে মাস্ক সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আমার টিকটক কেনার কোনো পরিকল্পনা নেই এবং যদি এটি আমার মালিকানায় আসেও, আমি কী করব সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি টিকটক ব্যবহার করি না। অ্যাপটির ফরম্যাট সম্পর্কেও খুব বেশি জানি না। তাই এটি কেনার বিষয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই।’
নতুন কিছু গড়তেই বেশি আগ্রহী মাস্ক
টিকটক কেনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে মাস্ক বলেন, ‘আমি সাধারণত নতুন কোম্পানি গড়ে তোলায় বেশি মনোযোগ দিই। কেনার চেয়ে নতুন কিছু তৈরি করাকেই আমি বেশি প্রাধান্য দিই।’ তবে তিনি টুইটার (বর্তমানে এক্স) কেনার বিষয়টিকে ‘ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা
ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে টিকটক নিষিদ্ধের পরিকল্পনা নিয়ে নির্বাহী আদেশ জারি করা হয়েছিল, যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ১৯ জানুয়ারি। মার্কিন আইনপ্রণেতারা আশঙ্কা করছেন, চীনা মালিকানাধীন বাইটড্যান্স মার্কিন ব্যবহারকারীদের তথ্য চীনা সরকারের সঙ্গে ভাগ করতে বাধ্য হতে পারে। যদিও টিকটক বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।
টিকটক নিষিদ্ধ হলেও মার্কিন অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করতে পারছেন, ফলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে এখনও অনেকেই এটি ব্যবহার করছেন।
ট্রাম্পের অবস্থান বদলাচ্ছে?
ডোনাল্ড ট্রাম্প টিকটকের বিষয়ে কিছুটা নরম অবস্থানে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রথম দফার শাসনামলে তিনি অ্যাপটি নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন, তবে এখন বলছেন, ‘টিকটকের প্রতি এক ধরনের ভালোবাসা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের সমর্থন পেতে টিকটক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
এছাড়া, ট্রাম্প সম্প্রতি একটি সার্বভৌম সম্পদ তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন, যার লক্ষ্য এক বছরের মধ্যে অর্থ সংগ্রহ করে টিকটক কেনার উদ্যোগ নেওয়া।
বাইটড্যান্সের অবস্থান
অন্যদিকে, টিকটকের মূল কোম্পানি বাইটড্যান্স আগেও জানিয়েছে, তারা টিকটক বিক্রির কোনো পরিকল্পনা করছে না।
টিকটকের ভবিষ্যৎ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এখনো অনিশ্চয়তা কাটেনি, তবে ইলন মাস্কের সাফ বক্তব্যে অন্তত এই গুঞ্জনের ইতি ঘটেছে যে তিনি অ্যাপটি কেনার পরিকল্পনা করছেন।
সোর্স: রয়টার্স